মসজিদের একটি কাঁঠালের নিলাম নিয়ে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মখলেছুর রহমান (৬০) নামে আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ জনে।
পুলিশের ভয়ে আহত অবস্থায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে সোমবার (১০ জুলাই) মধ্যরাতে এই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এখন পর্যন্ত দু'পক্ষের দুজন, দুজন করে উভয় পক্ষের ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মৃত ছুফি মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৫৮), মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে নুরুল ইসলাম (৪২), আব্দুল বাছিতের ছেলে শাহজাহান (৩৬) ও মখলেছুর রহমান (৬০)। এছাড়াও দু'পক্ষের সংঘর্ষে আরও অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে।আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে৷
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে এক ব্যক্তি একটি কাঁঠাল দান করেন। পরে মসজিদে উপস্থিত গ্রামবাসীর সামনে কাঁঠালটি নিলামে তোলা হয়। এতে গ্রামের দ্বীন ইসলামের পক্ষের লোকজন দামের কথা শোনা যাচ্ছে না বলে আওয়াজ তুললে প্রতিপক্ষ একই গ্রামের সুনু মিয়া ও জুনাব আলী গংরা বলে উঠেন মসজিদের ভেতরে অবস্থানকারী সবাই শুনলেও তোমরা কেনো শুনতে পাওনি। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বাবুল মিয়া ও নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। শাহজাহান মিয়াকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। এরা গ্রামের দাঙ্গাবাজ গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত। দীর্ঘদিন থেকে উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আবার আদালতে ৫-৬ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, প্রথমে তিনজন মারা গেছে পরে রাতে একজন মারা গেছেন, তবে তিনি এই ঘটনার কারণে মারা গেছেন কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষে বের হয়ে আসবে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের ৬ জন আটক করা হয়েছে। ওই এলাকায় এখনো অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে ৷ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ৷